Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2017

অচিন পাখী

ক্লা স নাইনে আমার এক স্যার বলেছিলেন, ‘চাইলে তুমি ফিউচারে যেতে পারবে।‘ মনটা আনন্দে নেচে উঠেছিল। টাইম মেশিনের গল্প আগেই পড়া ছিল। সেটা তাহলে এবার সত্যি হতে চলেছে? জানতে চেয়েছিলাম, কীভাবে? জবাবে স্যার যা শুরু করলেন, তাতে আমার মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। বাপ রে বাপ। বেজায় কঠিন। আগে জানলে একটু ও উৎসাহ দেখাতাম না। আমার মনমরা ভাব দেখে স্যার বললেন, ‘অঙ্কে যাদের আতঙ্ক তাদের জন্য এসব বোঝা মুশকিল।‘ ‘ভালো ভালো জিনিষ তো জানতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তাই বলে অঙ্ক? আমি ওতে নেই।‘ জোরে বলার সাহস নেই। তাই মনে মনেই বললাম। পরে যদি ও বিজ্ঞান শেখার দায়ে অঙ্ক আমাকে শিখতে হয়েছিল। সেসব তো স্টুডেণ্ট লাইফের কথা। এখন ভাবি, আমার মত আরো অনেকেই নিশ্চয় আছেন যারা বিজ্ঞানের নতুন নতুন ব্যাপার জানতে আগ্রহী। কিন্তু ঘুরেফিরে সমস্যা ওই এক জায়গায়। ড্রাগনের মত ভয়ঙ্কর আগুনে অঙ্ক! সেই দুঃখের জায়গা থেকেই নিজেকে একটা চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। বিনা অঙ্কে বিজ্ঞানের কথা বলব। যাতে ক্লাস নাইনের ছাত্র ও বুঝতে পারে। টাইম মেশিনে চড়ে যদি অতীত বা ভবিষ্যতে যেতে হয় তবে প্রথমেই যে প্রশ্নটি আসবে তা হল অতীত, ভবিষ্যত, বর্তমান কা

গণেশবাবুর স্মার্টফোন

স কালে চায়ের সাথে বিস্কুটের মত খবরের কাগজ না হলে আমার একদমই চলে না। সবে প্রথম পাতায় চোখ বোলাচ্ছি হঠাৎ কাগজের ওপর একটা ছায়া পড়ল। মুখ তুলে দেখি গণেশবাবু। মুখে লাজুক হাসি। হাতে একটা কাগজে মোড়া ছোট বাক্স। চাইনিজ স্পেস স্টেশন নিয়ে আমার লেখা ‘তিয়াংগং’ এর গল্প যারা পড়েছেন তারা গণেশবাবুকে ভালো করেই চেনেন। যারা চেনেন না, তাদের বলে দিই, ইনি আমার প্রতিবেশী। বয়স এখনো ষাটের নীচে। একমাত্র ছেলে থাকে ইউএসএ তে। -আরে, আসুন আসুন! আমার বিরক্তি গণেশবাবুকে বুঝতে দিলাম না। -বসুন, কী ব্যাপার, হাতে ওটা কী? -আর বলবেন না মশাই, ছেলে আমাকে গাড্ডায় ফেলে দিয়েছে। নাহলে কি সকাল সকাল আপনাকে বিরক্ত করতে আসি? এই মরেছে! গণেশবাবু কি আমার অভিনয় ধরে ফেলেছেন? তাই ডবল জোর দিয়ে বললাম, ‘আরে আরে, মানুষ তো মানুষের কাছেই আসবে। এত ভাবছেন কেন? তা, কী বিপদে ফেলল আপনার ছেলে? মেয়ে পছন্দ করে ফেলেছে না কি? বলা যায় না, আমেরিকা বলে কথা।‘ -না না, তা নয়। আপনাদের আশীর্বাদে ছেলের এখনো কোন বেচাল দেখিনি। -তবে? -ছেলে আমার জন্য এইটা পাঠিয়েছে। হাতের বাক্সটা এবার আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন গণেশবাবু। হাতে নিয়ে ক

নাটকঃ লিগ্যাসি কোড ১৯-০৫-১৯৬১

ছো টবেলায় পড়েছিলাম কলম নাকি তলোয়ারের চেয়ে অনেক ধারালো, অনেক শক্তিশালী। এতদিন তাই ভাবতাম। এখন লিখতে বসে কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছে। বুধবার বঙ্গভবনে যে নাটক দেখলাম তাকে কাগজের পাতায় ফুটিয়ে তোলার কনফিডেন্স অন্ততঃ আমার কলমে নেই। নাট্যকার অরিজিৎ আদিত্য ও নির্দেশক অভিনেতা সুব্রত রায়ের প্রতিভার সামনে নতজানু হয়ে এ লেখা লিখছি। গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ ডঃ রাজীব কর নাটকটি প্রথমবার মঞ্চস্থ হয়েছিল দিল্লীতে। এবার শিলচরে হল। এ নাটকের যেটা ক্যানভাস, দুরূহ বাংলায় যাকে বলে পটভূমিকা, সেটা বরাক উপত্যকার তো বটেই গোটা অসমের সবারই জানা। তবে ভারতবর্ষের বেশির ভাগ লোকই এ নিয়ে খুব একটা কিছু জানেন না। গল্পের মুখ্য চরিত্র অর্জুন নমশূদ্র এক ‘ডি-ভোটার’। এই ‘ডি-ভোটার’ বা ডাউটফুল ভোটার শব্দটি অসমের বাঙালীদের জন্যে আতঙ্কের অপর নাম। কারো নামে একবার যদি এই ‘ডি-ভোটার’ নোটিস আসে তবে তিনি নিজভূমেই পরবাসী হয়ে গেলেন। তাঁকে এবার আদালতে প্রমাণ করতে হবে তিনি ভারতের নাগরিক। মাননীয় গৌহাটি হাইকোর্টের আদেশ মত বিচার না হওয়া পর্যন্ত ‘ডি-ভোটার’ দের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করে রাখতে হয়। রাজ্যের অনেক জায়গায় জেলগুলিকেই ড

শিলচরের নাটকে বসন্তের হাওয়া

শ নিবার শিলচর ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামের মঞ্চের পর্দা যখন খুলল, ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক ছ’টা। শুরু হল সারস্বত নাট্য উৎসবের দ্বিতীয় রজনীর প্রথম নাটক – আজ বসন্ত। রচনা ইন্দ্রনীল দে। নির্দেশনা ও সঙ্গীত পরিচালনা সায়ন বিশ্বাস। দলের নাম ‘আজকের প্রজন্ম’। গল্প শুরু হল জীবনের সব ডিপার্টমেণ্টে হেরে যাওয়া এক অতি সাধারণ বোকাসোকা তরুণ হারু কে নিয়ে। সোমশিখা মজুমদার, অনন্যা গুপ্ত ও সুস্মিতা চৌধুরী সৌজন্যঃ পার্থ শীল আগের দিনের ইউরোপীয় নাটকে মৃত আত্মা নয়তো অ্যাঞ্জেলদের দেখা মিলত। তারা সব জানত - ভূত, ভবিষ্যৎ সব কিছুই। অনেকটা সেই প্যাটার্নে মঞ্চে সাদা পোষাক পরা তিন কন্যা হারুকে ঘিরে ধরে নাচল। অপেরার মেজাজে সুরেলা গলায় গাইল বাংলা গান, যার সুর পাশ্চাত্য কর্ডে বসানো তবু প্রচন্ড রকমভাবে দেশী। অনেকটা মহালয়ার চন্ডীপাঠের ‘রূপং দেহি, জয়ং দেহি’র মত সুর। কিন্তু অনন্য। যন্ত্রানুসঙ্গ পরিমিত।গানের কথা ও ভালো। শিল্পীরা ও ভালো গেয়েছেন। বলা যেতে পারে এটা ছিল নাটকের প্রিল্যুড। অণির্বাণ রায় ও দেবরাজ পুরকায়স্থ। সৌজন্যঃ পার্থ শীল নাটকে এমন এক সময়ের কথা বলা হয়েছে যখন নকল ফুলের ভীড়ে